বুধবার, ২০ জানুয়ারী ২০২১, ০৯:৩৮ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: মাস্ক ব্যবহারে কঠোর হচ্ছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন। সরকারের নিদের্শনা বাস্তবায়নের জন্য গত দুদিন থেকে জেলা প্রশাসনের পক্ষে কঠোর অবস্থান নেয়া হয়েছে। আগে যানবাহনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য রাজশাহী মহানগরীর মোড়ে মোড়ে চেক পোষ্ট বসানো হলোও এবার যানবাহনের যাত্রী ও রাস্তায় চলাচল করা লোকজন মাস্ক ব্যবহার করছে কিনা তা তদারকির জন্য মাঠে কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশান।
সরকারী মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক ঘোষণার পর অনেকটা নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। তবে মাস্ক ব্যবহারের বিষয়ে কঠোরভাবে তদারকি করা হলেও এখন পর্যন্ত মাস্ক ব্যবহার না করা ব্যক্তিদের জরিমানা করা করা হয়নি। প্রথম পর্যায়ে শুধু মাত্র সচেতনাতামূলকভাবে প্রচারণা ও মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। একই সাথে যাদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে তাদের নাম ঠিকানা লিখে রাখা হচ্ছে। পরবর্তিতে মাস্ক বিতরণ করা ব্যক্তি মাস্ক ব্যবহার না করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়ে দেয়া হচ্ছে।
তবে আবারো বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষে রাজশাহীতে মাস্ক বিতরণ শুরু হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে সচেতনতার কারণে মাস্ক ব্যবহার বাড়ছে।
সারা দেশের ন্যায় রাজশাহীতেও শুরু হয়েছে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ। এই অবস্থায় করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় এক মাত্র মাস্ক পরা ছাড়া কোনো উপায় নেই এমনটাই বলা হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে। ইতিমধ্যে রাজশাহীতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের পরিমান বাড়ার সাথে মৃত্যুও বাড়ছে। দুমাস আগেও রাজশাহীতে করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর ঘটনা ছিল শূণ্যের কোটায়। কিন্তু গত নভেম্বর মাসের শেষের দিকে এসে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্তের সাথে মৃত্যুর হার বাড়তে শুরু করে। শুধু রাজশাহীতেই নয়, সারাদেশেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেড়েছে। যার কারণে সরকার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছে। এমনকি মাস্ক ব্যবহার না করলে জেল জরিমানার বিধান করেছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতার জন্য মূলত সরকারের পক্ষে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে গত কয়েকদিন থেকে জেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের প্রচার প্রচারণার কারণে রাজশাহীতে মাস্ক ব্যবহার কারীদের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। মানুষের মাঝে সৃষ্টি হচ্ছে সচেতনতার। তারপরও কিছু মানুষ নিদের্শনা অমান্য করে মাস্ক ছাড়াই বাইরে বের হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার সামাজিক দায়বদ্ধতার জন্য রাজশাহী জেলা বিএনপির উদ্যোগে পুঠিয়া ও দুর্গাপুরের বিভিন্ন এলাকায় বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করেছে। মাস্ক বিতরণের সময় সচেতনতামূলক প্রচার প্রচারণাও চালানো হয়েছে। নিজে বাঁচুন অন্যকে বাঁচতে দিন শ্লোগান নিয়ে উপজেলা পর্যায়ে মাস্ক বিতরণ ও সচেতনতামূল প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। শুধু বিএনপির পক্ষেই নয়, রাজশাহী জেলা প্রশাসন, নগর ও পুলিশের উদ্যোগেও মাস্ক বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। উপজেলার মত নগরীর ওয়ার্ড ভিত্তিকভাবে এসব কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সচেতনতার কাজে লাগানো হচ্ছে পুলিশিং কমিটিকেও। সে ক্ষেত্রে দেখা গেছে করোনা ভাইরাসের প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সব ধরনের সংগঠন মাঠে কাজ শুরু করেছে।
এদিকে শুক্রবার সকালে রাজশাহী নগরীর রেলগেট, বর্ণালী মোড়, জিরোপয়েন্টসহ কয়েকটিস্থানে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চেকপোষ্ট বসিয়ে বিভিন্ন যানবাহন আটক করে যাত্রীদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করা হয়। একই সাথে মাস্ক ব্যবহার না করায় বেশ কিছু অটোরিক্সার চালককে আটক করা হয়। পরে তাদের জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিলের সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান, মাস্ক ব্যবহারে সতর্ক না হলে কঠোর অবস্থানে যাবে জেলা প্রশাসন। আপাতত সচেতন করা হচ্ছে। কিন্তু এরপর মুখে মাস্ক না থাকলে সরাসরি জরিমানা করা হবে। তিনি বলেন, এখনো যেহুত করোনা ভাইরাসের ওষুধ আবিস্কার হয়নি সেহুত মাস্ক ব্যবহার ছাড়া এর প্রতিকারের কোনো উপায় নেই। যার কারণে সরকারের ঘোষিত বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে দেখা হবে এবং কঠোর অবস্থানে থাকবে জেলা প্রশাসন।